SATKHIRA MEDIA HOUSE
বৃহস্পতিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. আন্তর্জাতিক
  2. আমাদের পরিবার
  3. আমাদের লক্ষ্য
  4. আশাশুনি
  5. কলারোয়া
  6. কালিগঞ্জ
  7. ঘোষণা
  8. জাতীয়
  9. তালা
  10. দেবহাটা
  11. পাটকেলঘাটা
  12. প্রেস রিলিজ
  13. বিশেষ বার্তা
  14. শ্যমনগর
  15. সম্পাদকিও

সাতক্ষীরাসহ ১২ জেলায় আজ থেকে কার্য কর

প্রতিবেদক
admin
সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫ ১:১৯ অপরাহ্ণ

সাতক্ষীরাসহ ১২ জেলায় আজ থেকে কার্য কর ৮ ধরনের মামলার আগে মধ্যস্থতার বাধ্যবাধকতা যেতে হবে লিগ্যাল এইড অফিসে ।

শেখ সাদিক হোসেন

পাঁচটি দেওয়ানি ও তিনটি ফৌজদারি মোট আটটি আইনের বিরোধ নিষ্পত্তিতে বাধ্যতা মূলকভাবে মধ্যস্থতার পথ বেছে নিয়েছে সরকার। এসব আইনের আওতায় কোনও বিরোধে আদালতে সরাসরি মামলা করা যাবে না। প্রথমে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে মধ্যস্থতার চেষ্টা করতে হবে। কেবল মধ্যস্থতা ব্যর্থ হলেই আদালতে মামলা কর যাবে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। ওই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে সাতক্ষীরা জেলাসহ দেশের ১২টি জেলায় আজ ১৮ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) থেকে নির্দেশ কার্যকর হবে। এ সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তিও ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকশ করেছে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা। জানা যায়, ভুয়া মামলা কমানো, মামলার চাপ হ্রাস এবং বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি কমানোর উদ্দেশ্যে ২০০০ সালের “আইনগত সহায়তা প্রদান আইন” এর সংশোধোনের মাধ্যমে “অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত অধ্যাদেশ” নামে একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। যা গত ১ জুলাই আইন ও বিচার বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। দেশের আইন অঙ্গনে বছরের পর বছর মামলার চাপ বাড়ছে। মানলার চাপ কমানো, নির্দোষ ব্যক্তিদের হয়রানি থেকে মুক্তি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি লাঘবের কথা বিবেচনা করেই এই আটটি আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে।যে আটটি আইনের ধারা লিগ্যাল এইড অফিসে মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো হলো-পারিবারিক আদালত আইন ২০২৩ এর ৫, বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯১, সহকারি জজ আদালতের এখতিয়ারভুক্ত বন্টন সম্পর্কিত বিরোধ, স্টেট অ্যাকুজিশন অ্যান্ড টেন্যান্সি অ্যাক্ট ১৯৫০ এর সেকশন ৯৬ এ উল্লেখিত অগ্রক্রয় সম্পর্কিত বিরোধ, নন-এগ্রিকালচারাল টেন্যান্সি অ্যাক্ট ১৯৪৯-এর সেকশন ২৪ এ উল্লেখিত অগ্রক্রয় সম্পর্কিত বিরোধ, পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন ২০১৩ এর ধারা ৮অনুসারে পিতা-মাতার ভরণপোষণ সম্পর্কিত বিরোধ, যৌতুক নিরোধ আইন ২০১৮ এর ধারা ৩ ও ৪ এ যৌতুক সম্পর্কিত অভিযোগ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ধারা ১১(গ)তে বর্ণিত যৌতুকের জন্য নির্যাতন সম্পর্কিত অভিযোগের ক্ষেত্রেই নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। আজ (১৮সেপ্টেম্বর) থেকে যেসব জেলায় এই আইন কার্যকর হবে সেগুলি হলো, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙ্গামাটি, সিলেট, মৌলভীবাজার এবং সুনামগঞ্জ। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান এবং সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম পত্রদূতকে জানান, লিগ্যাল এইড অফিসে মধ্যস্থতার প্রধান সুফল হলো এর ফলে বিচারপ্রার্থীদের জন্য একটি দ্রুত, সহজ ও সাশ্রয়ী উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ তৈরি হবে।লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে একজন বিচারকের তত্বাবধানে থেকে বিরোধ নিষ্পত্তি সহজ হবে এবং পক্ষদ্বয় উপকৃত হবে উল্লেখ করে সাতক্ষীরায় সদ্য যোগদানকারী জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (সহকারি জজ) লিটন দাশ পত্রদূরকে জানান, বর্তমানে দেশে ৪৫ লাখ মামলা বিচারাধীন। মামলা জট চরম আকার ধারণ করেছে। বিদ্যমান মামলার সঙ্গে প্রতিনিয়ত নতুন দায়েরকৃত মামলা যুক্ত হচ্ছে। মামলার সংখ্যানুপাতে বিচারকের সংখ্যা অপ্রতুল। এ অবস্থায় যেসব বিরোধ বা অভিযোগ পক্ষগনের সমঝোতায় দ্রুত এবং সহজে নিষ্পত্তি করা সম্ভব, সেসব বিরোধ বা অভিযোগ মামলা দায়েরের আগেই মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা গেলে বিচারপ্রার্থীরা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনি এ খাতে রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয়ও হ্রাস পাবে। সাতক্ষীরা জজ কোর্টের সরকারি কৌশলী (জিপি) অসীম কুমার মন্ডল জানান, সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি আরও জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রে জমি জায়গা সংক্রান্ত দেওয়ানী মামলার কারণে একাধিক ফৌজদারী মামলার সৃষ্টি হয়। এজন্য পাঁচ প্রকারের দেওয়ানি মামলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে আপোস মীমাংসার চেষ্টা করা হলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং মামলা জট কমবে। মামলা দায়ের এর পূর্বে লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে আপসের চেষ্টা করা হলে বিচারপ্রার্থীরা অহেতুক হয়রানি থেকে মুক্তি পাবে এবং সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে উল্লেখ করে সাতক্ষীরার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শেখ আব্দুস সাত্তার জানান, ইতোপূর্বে অনেক সাধারন মানুষ মিথ্যা মামলার জালে আটকে যেত, এখন থেকে দুই পক্ষের মধ্যে একজন বিচারকের উপস্থিতিতে আপসের চেষ্টা করা হলে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রবণতা অনেকাংশে কমে যাবে। ফলে মামলার চাপও হ্রাস পাবে। সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী এটিএম ফখরুল আলম বাবু জানান, লিগাল এইড অফিসে যাওয়া মানে এক নতুন প্রক্রিয়া শুরু হওয়া, যা মামলা শুরুর পূর্বে বাড়তি সময় ও জটিলতা সৃষ্টি করবে। ফলে বিচারপ্রার্থীকে আরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে। সাতক্ষীরা জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের নেত্রী ফরিদা আক্তার বিউটি পত্রদূতকে জানান, একজন নারীকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করার পর সে কিভাবে মধ্যস্থতা করতে যাবে? নারীরা সমাজ ও পরিবারে এমনিতেই দুর্বল পক্ষ। এখন এ আইনে তাদের আরও দুর্বল করে দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের জন্য বাস্তবতা কত কঠিন হচ্ছে? এটাতো আইনেরও পরিপন্থী কাজ। একজন মানুষ আগে যেখানে অন্যায় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইনের আশ্রয় নিতে পারতো, এখন তাকে লিগ্যাল এইড অফিসে মধ্যস্থতার জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০০০ সালে জাতীয় আইনগত সহয়তা প্রদান আইন প্রণয়ন করা হয়। এই আইনের ২১ ‘ক’ ধারা অনুযায়ী সারা দেশে লিগ্যাল এইড অফিসার বিকল্প পদ্ধতিতে বিরোধ নিস্পত্তি করেন এবং আইনি সেবা প্রত্যাশীদের আইনি পরামর্শ প্রদান করেন। ২০০৯ সাল থেকে সরকারি খরচে সারা দেশে অসহায় বিচারপ্রার্থীদের জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার মাধ্যমে আইনি সহায়তা প্রদান কার্যক্রম চালু করা হয়। আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য প্রতিটি জেলায় বর্তমানে একজন করে লিগ্যাল এইড অফিসার রয়েছেন। লিগ্যাল এইড অফিসার একজন বিচারক এবং লিগ্যাল এইড অফিসারের কর্মকে এরই মধ্যে গেজেট দ্বারা বিচারিক কর্ম হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। আইনের অধীন থেকে লিগ্যাল এইড অফিসার ‘মধ্যস্থতা কার্যক্রম’ পরিচালনা করেন এবং আইনি প্রক্রিয়ায় দুই পক্ষের সম্মতি ও সমঝোতায় মধ্যস্থতা চুক্তি সম্পাদন করে থাকেন। এ প্রক্রিয়ায় বিরোধ নিষ্পত্তিতে ইতোমধ্যে ব্যাপক সুফলও মিলছে। সাথে সাথে অর্থ ও সময় দুটিই সাশ্রয় হচ্ছে বলে দাবি করেন বিচার প্রার্থী অনেকেই।

সর্বশেষ - প্রেস রিলিজ